আমাদের সম্পর্কে
১। ভূমিকাঃ
১৯৭১ সনে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ০৪ মার্চ, ১৯৭২ সনে বাংলাদেশের নিজস্ব মুদ্রা টাকার প্রথম প্রচলন শুরু হয়। কাগজী নোট মুদ্রণের জন্য দেশের নিজস্ব মুদ্রণালয় না থাকায় প্রতি বছর প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে কারেন্সি নোট ও ব্যাংক নোট আমদানীপূর্বক দেশে নোটের চাহিদা মিটানো হতো। বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয়, নিজস্ব সম্পদের ব্যবহার ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সরকার একটি সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেস স্থাপনের নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক ১৯৮১ সনে ‘সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেস’ নামে একটি প্রকল্প প্রণয়ন করে যা ১৯৮৩ সনে একনেক (ECNEC) কর্তৃক অনুমোদিত হয়। মুদ্রণালয়টি স্থাপনের দায়িত্বে নিয়োজিত বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকল্প বাস্তবায়নের সমস্ত ব্যয় বহন করবে মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ১৯৮৮ সনে পরীক্ষামূলকভাবে ১ টাকা মূল্যমানের কারেন্সি নোট এবং ১০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোট মুদ্রণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম কাগজী মুদ্রা উৎপাদন শুরু হয়। পরীক্ষামূলক উৎপাদনের প্রায় দেড় বছর পর ০৭ ডিসেম্বর, ১৯৮৯ সনে (২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৩৯৬) বাংলাদেশের মর্যাদা ও গৌরবের প্রতীক ‘সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেস’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়।
নোট উৎপাদনের পাশাপাশি ১৯৮৯-১৯৯০ সন থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে গ্রাহকের চাহিদা মোতাবেক প্রাইজবন্ড, সঞ্চয়পত্র, স্মারক ডাকটিকিট, ইনভেলাপ, পোস্ট কার্ড, সরকারী ট্রেজারী বন্ড, পোস্টাল স্ট্যাম্প, নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প, রেভিনিউ স্ট্যাম্প, সিগারেট ট্যাক্স-লেবেল, বিড়ি-ব্যান্ডরোল, বাণিজ্যিক ব্যাংকের চেকবই, সরকারি ও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তামূলক ট্যাক্স-টোকেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষার নম্বরপত্র ও সনদপত্রের ফরমেট, বীজ প্রত্যয়ন ট্যাগ, বিআইডব্লিউটিএ এর টার্মিনাল টিকেট, রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরোর জিএসপি ফরম, গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন পেপার সিল ইত্যাদি মুদ্রণ করা হয়েছে এবং হচ্ছে।
১৯৯২ সনে তৎকালীন কোম্পানি আইনের অধীনে ‘দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশন (বাংলাদেশ) লিমিটেড’ নামে প্রকল্পটি একটি বেসরকারী পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধিত হয়। প্রায় ছেষট্টি একর জায়গা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন বাংলাদেশে ‘টাকা’ মুদ্রণের এই প্রিন্টিং প্রেসটি বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ঘোষিত একটি অতি নিরাপত্তামূলক কেপিআই-১ (এ) মর্যাদা সম্পন্ন প্রতিষ্ঠান। চার স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা চৌকি ছাড়াও প্রেস ভবনের ভেতরে বহু পর্যায়ের নিরাপত্তা বলয় রয়েছে; এই প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা বিধানে নিয়োজিত আছে বাংলাদেশ পুলিশ ফোর্স ও টাকশালের নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মী। এই প্রতিষ্ঠানটি সাধারণ জনগণের নিকট ‘টাকশাল’ নামে সর্বাধিক পরিচিত। ‘দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশন (বাংলাদেশ) লিমিটেড’-এর সংক্ষিপ্ত রূপ ‘এসপিসিবিএল’ বা ‘এসপিসি’ নামেও এই প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের নিকট সুপরিচিত।
২। লোকবল
মোট অনুমোদিত জনবল-১০৬৮, বর্তমানে কর্মরত-৭০৬ জন, এর মধ্যে কর্মকর্তা-২৭৬ জন ও কর্মচারী-৪৩০ জন।
৩। পরিচালক পর্ষদ
এসপিসিবিএল একটি বেসরকারী পাবলিক লিঃ কোম্পানী। করপোরেশনের সংঘ স্মারক ও পরিমেল বিধি অনুযায়ী পরিচালক পর্ষদ নিম্নরূপঃ
১। গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক চেয়ারম্যান
২। বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড কর্তৃক মনোনীত একজন ডেপুটি গভর্নর, পরিচালক
৩। ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এসপিসিবিএল, গাজীপুর, পরিচালক
৪। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের একজন প্রতিনিধি, পরিচালক
৫। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের একজন প্রতিনিধি, পরিচালক
৬। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের একজন প্রতিনিধি, পরিচালক
৭। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি, পরিচালক
৪। সদস্য
দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশন (বাংলাদেশ) লিঃ ইন্টারন্যাশনাল গভর্ণমেন্ট প্রিন্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের নিয়মিত সদস্য।